আন্তর্জাতিক

ইয়াঙ্গুন রক্ষায় সেনা মোতায়েন মিয়ানমার জান্তার

মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে সেনা মোতায়েন করেছে জান্তা সরকার। এ ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। জান্তারা স্থানীয় বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেনা মোতায়েন করেছে। এ কারণে অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করেছেন।

গত কয়েক মাস ধরেই প্রতিরোধের মুখে পড়েছে সেনাবাহিনী। বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্মুখ লড়াইয়ে একের পর এক ঘাঁটি হারাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে দেশটির প্রায় অর্ধেক বিদ্রোহীদের দখলে। এজন্য বড় শহরগুলো রক্ষার চেষ্টা করছে জান্তা। নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর বসানো হয়েছে সেনা চৌকি।

এরইমধ্যে ইয়াঙ্গুনে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে বিদ্রোহীরা। সেনাদের অবস্থানের জায়গায় সাধারণদের না যাওয়ার অনুরোধ করেছে তারা।

এই ঘটনা যেন ২০২১ সালের অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। যখন সেনা বিরোধী বিক্ষোভ দমনে স্কুল ও হাসপাতালে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল।

গত কয়েক দিন ধরেই ইয়াঙ্গুনে অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় সূত্র বলছে, তরুণ ও প্রাপ্তবয়স্করা জান্তাকে সহায়তা করতে অনিচ্ছুক। তাই তারা পালিয়ে রয়েছেন।

আবার অনেক এলাকায় জান্তা অনেককে অপহরণ করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অপহৃতদের মুক্তিতে জান্তা ৫০০,০০০ কিয়াট (১৫০ ডলার) পর্যন্ত মুক্তিপণ দাবি করছে বলেও অভিযোগ।

স্কুলে সৈন্য মোতায়েনের পাশাপাশি ইয়াঙ্গুনে সামরিক টহল বৃদ্ধি, কঠোর পরিদর্শন, হামলা, গ্রেপ্তার ডাকাতির অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।

ওই এলাকাগুলোতে জান্তা সতর্ক করেছে, লাইসেন্সবিহীন স্যাটেলাইট ডিভাইস এবং অন্যান্য ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করলে টেলিযোগাযোগ আইনের অধীনে বিচার করা হবে।

গত ২৭ অক্টোবর চীনের সীমান্তবর্তী উত্তর শান রাজ্যে সামরিক পোস্টে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর একটি জোট। “১০২৭” নামে ওই অপারেশনে বেশ কয়েকটি শহর দখল করে বিদ্রোহীরা।

মিয়ানমারের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ও আরাকান আর্মির (এএ) গ্রুপ “থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স” যৌথ এ অভিযান পরিচালনা করে। তাদের দাবি, বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা, নাগরিকদের আত্মরক্ষার অধিকার নিশ্চিত ও আঞ্চলকি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য এই অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে আর্টিলারি ও বিমান হামলা চালায় বিদ্রোহীরা।

যুদ্ধটি ইতোমধ্যে পশ্চিম রাখাইন ও চিন রাজ্যসহ বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো বলছে, এ অভিযানের মধ্য দিয়ে “অত্যাচারী সামরিক একনায়কত্ব” নির্মূল করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *