কক্সবাজার

ট্রেনযাত্রী ট্যুরিস্টদের সুবিধার্থে ট্রাফিক পুলিশের ‘কক্স-কার’

# ট্রেনের প্রথম দিনের সিডিউল থেকে চালুর পরিকল্পনা
# পর্যটকদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণই মূল উদ্দেশ্য
# শুরুতে ৩০/৪০ গাড়ি অন্তর্ভুক্ত থাকবে
# চাহিদার ভিত্তিতে বৃদ্ধির পরিকল্পনা

পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে ট্রেন আসছে ১ ডিসেম্বর। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার আগ্রহে কক্সবাজারকে সাজানো হয়েছে উন্নয়নের সোপান হিসাবে। ট্রেনে করে কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণ নিশ্চিত করতে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ।
বিদ্যমান যানবাহন সুবিধার পরিকল্পিত ব্যবহারের মাধ্যমে হয়রানিমুক্ত পর্যটন সেবা নিশ্চিতে জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ নতুন করে “কক্স-কার” নামের একটি সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে। চালক ও যাত্রীদের আস্থা ও নির্ভরতার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে অনলাইন ভিত্তিক এই উদ্যোগ। এমন কথা জানান কক্স-ক্যারের উদ্যোক্তা কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জসিম উদ্দিন। ইতোপূর্বে তিনি পর্যটন নগরীতে নিরাপদ ও পর্যটন-বান্ধব ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা গড়ার লক্ষ্যে যানবাহন চালকদের স্মার্ট ডাটাবেইজ ‘কক্স-ক্যাব’
তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে জাতীয় পর্যায়ে “স্মার্ট বাংলাদেশ পুরস্কার” এ ভূষিত হয়েছেন। সেই কক্স-ক্যাবের ওয়েবসাইটের সম্প্রসারিত সার্ভিস হবে ‘কক্স-ক্যাব’। কক্স-কার হবে অনেকটা উবারের বিকল্প সার্ভিস। ইতোমধ্যে সাইট ডেভেলপ সম্পন্ন করেছে এবং গাড়ি ও চালকদের তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া শুরু করেছে ট্রাফিক বিভাগ। ট্রেন আসার প্রথম দিন থেকে সার্ভিসটি চালু হতে পারে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

যেহেতু ঢাকা থেকে প্রথম ট্রেন রাত সাড়ে ১০ টায় ছেড়ে ভোর সাড়ে ৭ টায় কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাবে, ট্রেন যাত্রীদের হোটেল পর্যন্ত নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভ্রমণ নিশ্চিতে কক্স-কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন। কক্সবাজারে আগত পর্যটকরা ট্রেনে বসেই কক্স-ক্যাবের ওয়েবসাইট ভিজিট করে নির্দিষ্ট রেইটে প্রয়োজনীয় গাড়ি বুকিং করতে পারবেন।
ফলে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে নামার সাথে সাথেই পর্যটকরা তাদের অগ্রিম বুকিং দেওয়া গাড়িতে করেই নিরাপদে হোটেলে পৌঁছতে পারবেন নির্দিষ্ট ভাড়ায়। একই ভাবে চালকরা ভাড়া নিশ্চিত হয়েই রেলওয়ে স্টেশনে যাবেন। ভাড়ার আশায় স্টেশনে গিয়ে অপেক্ষা করতে হবে না কোন চালককে।
কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন- কক্স কার সার্ভিসটি অনেকটা উবারের বিকল্প হিসেবে আমরা চিন্তা করেছি। কক্স-ক্যাব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই একজন পর্যটক চালকদের পরিচয় ও মোবাইল নাম্বার, গাড়ির ছবি, গাড়ির মডেল, সিট ক্যাপাসিটি, ভাড়ার পরিমাণসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য পেয়ে যাবেন। পর্যটকদের সংখ্যা অনুপাতে গাড়ির আসন সংখ্যা বিবেচনা করে সামর্থ্য অনুযায়ী গাড়ি পছন্দ করতে পারবেন। এই নির্ধারিত ভাড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে শহরের যেকোন হোটেলের জন্য প্রয়োজ্য। কক্স-ক্যাবের ওয়েবসাইটে (www.coxscab.com) ওয়ান-স্টপ ট্যুরিস্ট সার্ভিসে রয়েছে হোটেল মোটেল ও রিসোর্ট এর তালিকা এবং কক্সবাজার শহরের নামকরা রেস্টুরেন্টের তালিকাও।
রয়েছে পর্যটন নগরীর প্রধান বাহন ইজিবাইক টমটমের পৌরসভা কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা।
ট্রাফিকের এই কর্মকর্তা জানান – আমরা ১ ডিসেম্বর ট্রেনের সাথে সমন্বয় করেই কক্স কার সার্ভিস চালু করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে ওয়েবসাইটে নানা তথ্য ইনক্লুড করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৩০ থেকে ৪০টি বিভিন্ন প্রকারের যানবাহন আমাদের কক্স-কারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পর্যটকের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে আমরা আরো গাড়ির এবং চালকের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে পরিধি বাড়াবো।
পর্যটন নগরীতে নিরাপদ ও আনন্দদায়ক ভ্রমণের জন্য ট্রাফিক পুলিশের এ গুরুত্বপূর্ণ ইনোভেশন অনেক কার্যকর হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *