পতনের মুখে দাঁড়িয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকার
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের চলমান সমন্বিত আক্রমণে দেশটির জান্তা বর্তমানে দুর্বল হয়ে পড়েছে। চীন, ভারত ও থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে চলছে এ আক্রমণ।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে সামরিক শাসনের জন্য এটিই ছিল সবচেয়ে বড় হুমকি। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতালাভের পর মিয়নমারে এক ডজনেরও বেশি জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্রগোষ্ঠী দেশের সীমান্ত অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে লড়াই করেছে।
সিটওয়ে-ইয়াঙগুন মহাসড়ক অবরুদ্ধ থাকায় পণ্যের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে; ফলে পণ্যের দাম বেড়েছে। জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং বলেছেন, আরাকান আর্মির সৃষ্ট সংকটের কারণে রাজ্যের বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং ম্রাউক-ইউ, কিয়াউকতাও ও পালেতওয়া শহরে সহিংসতা সৃষ্টি হয়েছে। রাখাইন রাজ্যের পাউকতাও, মিনবায়া, রাথেডং ও মংডু শহরে আরাকান আর্মি (এএ) সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
গত মাসে তারা রাথেডং, মংডু ও মিনবাইয়া শহরে পাঁচটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ক্রমবর্ধমান আক্রমণের কারণে সরকার প্রায় ২০টি শহর এবং ৩০৩টিরও বেশি ফাঁড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। পুরো ব্যাটালিয়নসহ শত শত জান্তা সৈন্য আত্মসমর্পণ করেছে। রাখাইন রাজ্যের এ সংকটের কারণে সীমান্তের এ পাশে যেন কোনো প্রভাব না পড়ে সেদিকে আমাদের লক্ষ রাখতে হবে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী দশকের পর দশক ধরে জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর (ইএও) সঙ্গে সংগ্রাম করে আসছিল। তবে এবারের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি তারা কখনো হয়নি। চলমান সেনাশাসনের শুরু থেকে মিয়ানমারের ওপর পশ্চিমা চাপ অব্যাহত রয়েছে। চীন, রাশিয়া ও ভারত মিয়ানমারকে নানাভাবে সমর্থন দিলেও এ পরিস্থিতি তাদের বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে।
দমন-পীড়নের মাধ্যমে সংঘাত নিরসন করতে না পেরে মিয়ানমার সরকার এতদিনে সংঘর্ষের পথ পরিহার করে রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চিন্তা করছে। এ সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং দেশজুড়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইরত জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতি একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।