জাতীয়

ভারতের গ্রিড দিয়ে নেপাল থেকে আসবে বিদ্যুৎ

ভারতের জাতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে আমদানি করা হবে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) এই বিদ্যুৎ কেনার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বৈঠকের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত জানান। নেপাল থেকে আনা বিদ্যুতের দাম কেমন হবে– জানতে চাইলে তিনি বলেন, দামের বিষয়ে আলোচনা হয়নি। পরবর্তী সময়ে দাম নির্ধারণ হবে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানিতে শুল্ক নির্ধারণ ঠিক করে বিদ্যুৎ বিভাগকে একটি আর্থিক প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ভারত থেকে প্রায় ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়। এ ক্ষেত্রে গড়ে দাম পড়ছে ইউনিটপ্রতি ৭ টাকার বেশি। ভারতের কোম্পানি আদানির তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ আনা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দাম কিছু বেশি। নেপাল থেকে আমদানি করা প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৭ টাকার কাছাকাছিই থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক

এদিকে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে দুটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনসহ ৯ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১৭টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত সচিব জানান, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে রিনিউয়েবল এনার্জি ইউকে, বাদল কনস্ট্রাকশন এবং জি-টেক সল্যুশন  কনসোর্টিয়াম। এখান থেকে প্রতি ইউনিট ১০ টাকা ৯৯ পয়সা দরে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে আনুমানিক ৩ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা।

এ ছাড়া কক্সবাজার সদর উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে কেএআই বাংলাদেশ অ্যালুমিনিয়াম ও অলটেক অ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট ১০ টাকা ৯৮ পয়সা দরে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে আনুমানিক ৩ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা।

কক্সবাজারের মহেশখালীতে সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি  দৈনিক ৬০০ এমএমসিএফ ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনে চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এ জন্য টার্মিনাল কোম্পানিকে রিগ্যাস চার্জ বাবদ দৈনিক ৩ লাখ ডলার বা ৩ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা (ট্যাক্স ভ্যাট ছাড়া) দিতে হবে।  সুইজারল্যান্ড থেকে এলএনজি আনার একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। দেশটির টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ারের কাছ থেকে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৯১ কোটি ৭৩ লাখ ২০৮ টাকা।

এদিকে, রোমানিয়া থেকে টিসিবির জন্য ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় মরক্কো, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২ লাখ টন সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। একই সঙ্গে কাফকো থেকে ৪০ হাজার টন সার কেনা হবে। এ ছাড়া সিলেট জেলার কুশিয়ারা নদীর ওপর ৮৩৮ দশমিক ৪০ মিটার সেতু নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৪৪ কোটি টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *