‘ভোটের পার্সেন্টেজ’ বাড়াতে নির্বাচনে যাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বড় প্রত্যাশা নেই, তবে দলের পরিচিতি ও ভোটের পার্সেন্টেজ বাড়াতেই নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা শওকত হোসেন নিলুর নেতৃত্বে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই দলটি ‘আম’ প্রতীক নিয়ে নিবন্ধন পায় ২০০৮ সালে। এরপর ২০০৮ ও ২০১৮ নির্বাচনে অংশ নিয়েও কোনও আসনে জয় আসেনি।
২০১২ সালের বিএনপির সঙ্গে ২০ দলীয় জোটে যুক্ত হওয়ায় ২০১৪ সালে নির্বাচন থেকে বিরত থাকে দলটি। পরে জোট থেকে বেরিয়ে ২০১৮-এর নির্বাচনে অংশ নেন এনপিপি।
এখন পর্যন্ত জাতীয় সংসদে যেতে না পারলেও ভোটার সংখ্যা ও দলীয় কার্যকলাপ বেড়েছে বলে দাবি করছেন এনপিপির শীর্ষ নেতারা। আগামীতে তাদের জনসমর্থন আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা তাদের। নেতারা বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে অন্যান্য দলের জনপ্রিয়তা কম। তাই দলের কার্যক্রম ও পরিচিতি বাড়াতে নিয়মিত নির্বাচনের মাঠে থাকা জরুরি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রমতে, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় নির্বাচনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ৩৩টি আসনে প্রতিযোগিতা করে ১০ হাজার ৩৪৮টি ভোট পায়, যা মোট ভোটের শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ (০.০১)।
২০১২ সালের নির্বাচনে দলটি ৮৩টি আসনে প্রার্থী দেয়, তবে একটিতেও জয়ের দেখা মেলেনি। তবে ভোটের সংখ্যা বেড়ে হয় ৩৬ হাজার ৬১১টি, যা মোট ভোটের শূন্য দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ (০.০৪)।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও অংশ নেবে দলটি। এবার ২৫০টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দলের বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন সালু। তবে নির্বাচন নিয়ে নানা শঙ্কার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
শেখ ছালাউদ্দিন সালু বলেন, নির্বাচনের জন্য আমাদের প্রস্তুতি ভালো। আমাদের ৩৫২টার মতো মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। শনিবারের মধ্যে আমরা ফাইনাল করবো। ৩০০ আসনে হয়তো হবে না, শেষ পর্যন্ত তবে ২৫০ থেকে ২৬০টি আসনে প্রার্থী দেবো।
এনপিপি বড় হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভোটাররা মোটা দাগে দুই ভাগে বিভক্ত—আওয়ামী লীগ না হলে বিএনপি। আরও কিছু পরিচিত দল আছে যাদের ভোটার রয়েছে। সে হিসেবে আমাদের দল প্রথম দাঁড়িয়েছিল ৩৩টি আসনে। পরের নির্বাচনে ৮৩টি আসনে। এবার ২৬০টি আসনে প্রার্থী দেবো। দল আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় কমিটি আছে। এখন দেখা যাক কী হয়।
সাবেক জোট-শরিক বিএনপি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে যে সংশয় প্রকাশ করছে তা অমূলক নয় জানিয়ে এনপিপির চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান নির্বাচনের বাস্তবতা কী তা আমরা সবাই দেখছি। এখন আমরা ছোট দল সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা রাখা ছাড়া আর কী করার আছে। ধারাবাহিক নির্বাচনে অংশ নেওয়াটাই আমাদের দলকে বড় করার একটি প্রক্রিয়া। এছাড়া গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা, গণতন্ত্র বিকাশ করা, সহিষ্ণুতা বাড়ানোর জন্যও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এখন তো রাজনীতিতে সহিষ্ণুতা নাই বললেই চলে।
কোনও আসনে জয়ী হওয়ার নিশ্চয়তা না থাকলেও ভোটের পার্সেন্টেজ বাড়ানোটাকে অর্জন হিসেবে দেখবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি। দলের চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন সালু বলেন, এবার আমাদের ভোটের পার্সেন্টেজ বাড়বে। নির্বাচনে অনেক দলের টার্গেটই থাকে তাদের ভোটার সংখ্যা বাড়ানো। দেশে ৪৪টি নিবন্ধিত দল। এর মধ্যে অন্তত ২৫টি দলের বলতে গেলে কোনও ভোটই নাই। আমরা তো তাও গতবার ১ শতাংশের কাছাকাছি গিয়েছিলাম। এভাবে যদি ভোটের পার্সেন্টেজ বাড়ানো যায় তাহলে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি একসময় পরিচিত জনপ্রিয় দল হবে ইনশাআল্লাহ। এবার আশা করছি সর্বোচ্চ ২ পার্সেন্ট ভোট পাবো। এর বেশি কঠিন হবে, অত অর্থ আমাদের নাই।