সকালে ১০৫ টাকার পেঁয়াজ বিকালে দেড়শ !
২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ভারত— গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হতে না হতেই অস্থিতিশীল হয়ে গেছে কক্সবাজারের পেঁয়াজের বাজার। শুধু শহর না, গ্রামেও পৌঁছে গেছে এই খবর।
এক লাফে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত। দেশীয় সিন্ডিকেটের সাথে তাল মেলালো কক্সবাজারের পাইকাররাও। অনেক মজুতদার গোদাম থেকে সরিয়ে রেখেছে পেঁয়াজের বস্তা। মাত্র ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রতি কেজিতে অতিরিক্ত হাতিয়ে নিচ্ছে ৫০ টাকা। তাদের হাতে জিম্মি সাধারণ ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের বড় বাজার ঘুরে দেখা যায় কঠিন দৃশ্য। অস্থির হয়ে গেছে পেঁয়াজের বাজার। দরদাম নিয়ে দোকানদারের সাথে ক্রেতাদের লাগছে ঝগড়া। বাড়ছে অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভ। নেই বাজার তদারকি। ঘুমিয়ে আছে স্থানীয় প্রশাসন। সুযোগ নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
সকালে খুচরা বাজারে যে পেঁয়াজের দাম ছিল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, বিকালে নেওয়া হচ্ছে কেজিতে ১৬০ টাকা পর্যন্ত। দর বৃদ্ধির খবরে সস্তায় কিনতে গিয়ে ফেরত গেছে অনেক ক্রেতা। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে বর্ধিত মূল্যে কিনেছে।
আগামী ৪ মাস পেঁয়াজ আমদানি না করলে বাজারে অনেক প্রভাব বড়বে। বর্তমান বাজারের দ্বিগুণ ছুতে পারে পেঁয়াজ।
বড় বাজারের মুদি কোদানদার শফিউল আলম সিবিএনকে বলেন, দাম বৃদ্ধির খবর পৌঁছার সাথে সাথে অনেক গোডাউন থেকে পেঁয়াজ ‘হাওয়া’ হয়ে গেছে। গতকাল কিংবা আজকে সকালের দামে পাওয়া যায়নি পেঁয়াজ। পাইকারী দোকানে খুচরা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির ‘সুযোগের সদ্ব্যহার’ করছে অসাধু দোকানদাররা।
আরেক দোকানদার জানালেন, যে আড়ৎদার থেকে তারা নিয়মিত পেঁয়াজ কিনতো তারা আজ ‘সংকট’ দেখাচ্ছে। মজুত থাকলেও বিক্রি করে নি।
হঠাৎ অস্থির পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে কি ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা জানতে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানকে ফোন করলে পাওয়া যায় নি। ভোক্তা অধিকার কক্সবাজার অফিসের নাম্বারটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
জানা গেছে, শুক্রবার সকালেই বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা কেজি পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহেও ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। এছাড়াও পাবনার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা করে। তবে দুপুরের পরই পাল্টে যায় পেঁয়াজের বাজারের দৃশ্যপট। বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা করে এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি করে।
মূলত: দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার খবর সন্ধ্যার মধ্যেই পৌঁছে যায় সাধারণ ব্যবসায়ীদের কানে। এরপরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে তারা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দেওয়া এক আদেশে, ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত। মূলত দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করার এ পদক্ষেপ নেয়।